❤আরজ আলী সমীপে❤

  ❤আরজ আলী সমীপে❤ || Mahamudul Hasan Ayan || 3:31 PM

কোনো এক নাস্তিক ব্যঙ্গ করে বলেছিলো, "অধিকাংশ ধর্ম অন্ধ বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত"। যদি তিনি ডিরেক্ট বলতেন তাহলে হয়তো এভাবে বলতেন,🙂ইসলাম হলো এমন ধর্ম যা অন্ধবিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত🙂 হ্যাঁ!আপনি ঠিকই বলেছেন। 


"ঈমানের মূল হচ্ছে গায়েবে বিশ্বাস। এমন কিছুতে বিশ্বাস করা যা দেখা যাচ্ছে না, ধরা যাচ্ছে না, ছোয়া যাচ্ছে না। মানুষ চাইলেই পৃথিবীতে বসে আল্লাহকে দেখতে পাবে না, সে চাইলেই জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন করতে পারবেনা। ফেরেশতাদের সাথে মতবিনিময় করতে পারবে না। সে পারবেনা কারন সে কিছু সীমাবদ্ধতার মধ্যে বন্দী। সেটা কি রকম? উত্তরে বলবো-সে অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ এই তিন সময়ের ফ্রেমে বন্দী। একেবারে বন্দি খাঁচার পাখির মতো। সে চিন্তা করতে পারে আগামীকাল কি হবে তা নিয়ে, আগে কি হয়েছিল তা নিয়ে, পরে কি হবে তা নিয়ে কিন্তু অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ এর বাইরে এসে কোনো কিছুই সে কল্পনা করতে পারেনা। কারন সে টাইমের ফ্রেমে বন্দী। বাই ডেফিনেশন স্রষ্টা কোনো টাইমের ফ্রেমে বন্দী নয়। সে ভূত,বর্তমান,ভবিষ্যৎ সবকিছুর উর্ধ্বে।

মানুষের সীমাবদ্ধতার দারুণ সে বাহ্যিক জগতের অনেক কিছুই দেখতে পায় না। অনেক কিছু শুনতে পায় না। যেমন ধরুন চোখ। সাধারণত ৩৯০-৭০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো মানুষ দেখতে পারে। এরচেয়ে কম বা এর চেয়ে বেশি আলো মানুষ দেখতে পায়না। কেন পারে না? কারন এটা মানুষের সীমাবদ্ধতা।

আবার ধরুন মানুষের কান কেবল ২০-২০০০০Hz এর মধ্যে থাকলেই কেবল মানুষ শব্দ শুনতে পায়। এর চেয়ে বেশি বা কম হলে মানুষ শব্দ শুনতে পায় না। কেন শুনতে পায় না? কারন এটাও মানুষের সীমাবদ্ধতা।

এতো এতো সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমারা কিভাবে আশা কীরতে পারি স্রষ্টা আমাদের ল্যাবের অনুবিক্ষন যন্ত্রের নিচে এসে ধরা দেবেন? মানুষকে স্রষ্টা এই ক্ষমতা দেননি। এর জন্যই তিনি না দেখে বিশ্বাস করতে বলেছেন। আপনি বলতে পারেন তবে কি স্রষ্টা কখনোই দেখা দেবেন না? হ্যা দেবেন, তবে সেটা আখিরাতে।

কড়া বা হালকা বিজ্ঞান মনস্ক লোকেরা এতোটুকু পড়ে হয়তো আমাকে দু-চার গালমন্দ করে আমার গোষ্ঠী উদ্ধার করে ফেলছেন। বলছেন "না দেখে আবার বিশ্বাস কি?"

বিজ্ঞাের যারা দেখে বিশ্বাস করতে অভ্যস্ত অর্থাৎ seeing is bliveing তত্ত্বে বিশ্বাসী। তাদের জন্য আমার কাছে রয়েছে মহা দুঃসংবাদ। দুঃসংবাদটি হলো বিজ্ঞান নিজেও এখন seeing is bliveing তত্ত্বে বিশ্বাস করেনা। কারন এতোদিন যারা মহাবিশ্বকে জেনে ফেলেছি, বুঝে ফেলেছি বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেন তাদের জন্য ভয়ংকর দুঃসংবাদ শোনাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা "নাসা"।

তারা বলেছেন," আমরা এতো বছর শ্রমসাধনা করে মহাবিশ্বের মাত্র ৫% এরও কম জানতে পেরেছি। বাকি ৯৫% হলো এক অদৃশ্য বস্তু যা দিয়ে পুরো পৃথিবীটা গঠিত। কিন্তু আমাদের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেও আমরা এই অদৃশ্য বস্তু গুলোকে দেখতে পাচ্ছি না জানতে পারছিনা।" তাদের মতে "আমরা এসম্পর্কে যতটুকু জানতে পরেছি তার থেকে ব্যপারগুলো অনেক বেশি অজানা"।

তাহলে বিজ্ঞানীরা কি করবেন? তারা নাই বলে চালিয়ে দেবেন। না তা কখনোই না।  তারা এগুলো আছে বলে বিশ্বাস করেই সামনে আগাবেন।

ডঃ জাফর ইকবাল স্যার যথার্থই বলেছেন, " যারা বিজ্ঞান চর্চা করে তারা ধরে নিয়েছে বিজ্ঞান দিয়েই সবকিছু আমরা ব্যাখ্যা করতে পারবো। কিন্তু কখনো যদি ব্যাখ্যা করতে না পারি তাহলে বুঝতে হবে এর পেছনে লুকিয়ে থাকা বিজ্ঞানটা এখনো জানা হয়নি"। প্রকৃতিও অনেক কিছু লুকিয়ে রাখে যা বিজ্ঞান কখনো জানতে পারেনা। আর আমি জোর গলায় বলতে পারি "হ্যা! এটাই হচ্ছে বিজ্ঞান"। এটা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা বা অক্ষমতা না। বরং এটাই হচ্ছে বিজ্ঞানের ধর্ম।

বিজ্ঞানীরা একটা পর্যায় গিয়ে কখনোই বলবেনা, "হবে"। বরং তারা বলতে বাধ্য হবে "হতে পারে"। তবে এগুলো আবিষ্কার করা যাচ্ছে না বলে বিজ্ঞান কখনোই বলেনা এগুলোর অস্তিত্ব নেই বরং তারা সেই অজানা,অচেনা,বুজতে না পারা জিনিসের প্রতি ঈমান আনে। বিশ্বাস করে। আর বিজ্ঞান এভাবেই আগায়। তাই আমি বলতে চাই শুধু ধর্ম নয়।  নাস্তিকদের আস্থার প্রতি বিজ্ঞানো আধুনিককালে এত্তোগুলো ঈমান নিয়ে চলে। তাছাড়া তারা এগুতে পারেনা। 

❤আরজ আলী সমীপে❤

#আরিফ আজাদ স্যার#