অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

 

এযেন কল্পনার মধ্যেই দিন পার হচ্ছে বাংলাদেশের এযেন বারবার জয় হচ্ছে ক্রিকেটের। আর হেরে যাচ্ছে দাম্ভিকতা। মাহামুদুল্লাহ-সাকিবের মুখে হাঁসি, অজিদের শিবিরে দুঃখের আহাজারী। হে বিশ্ববাসী আমরা যেনো এটাই দেখতে ভালোবাসি। 

স্বাগতিক বাংলাদেশ ও সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ৫ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ১০ রানের জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এই জয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল, যা যেকোনো ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। 

মিরপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২৭ রান স্কোরবোর্ডে জড়ো করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে অধিনায়ক রিয়াদ সর্বোচ্চ ৫৩ বলের মোকাবেলায় করেন ৫২ টি অতিমূল্যবান রান। তার অনবদ্য ইনিংসটিতে ছিল বেশ কিছু সিঙ্গেলস ও ডাবলস এবং ৪টি চারের মার। মিরপুরের উইকেট এতটাই ব্যাটসম্যানদের জন্য রুক্ষ ছিলো যে প্রত্যেককেই রীতিমতো যুদ্ধ করে প্রতিটা সিঙ্গেল রান আদায় করতে হয়েছে। 

উইকেটের এই যখন অবস্থা তখন সাকিব আল হাসানের ১৭ বলে ২৬ ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ১৩ বলে ১৯ রান করা যে কারো দৃষ্টি কারতে বাধ্য করে। কিন্তু অজিরাও তো কম যাবেনা সেটা সবারই জানা। তাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজলউড ও অ্যাডাম জাম্পা। অজি দলে অভিষিক্ত নাথান এলিস ছিলেন দুর্দান্ত। সেই সাথে এমন অভিষেক কেইবা না চাই, তিনি ৩৪ রান খরচ করলেও ইনিংসের শেষ ৩ বলে তিন উইকেট শিকার করে ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেকে গড়েন হ্যাটট্রিকের কীর্তি। কিন্তু তাতে কি ততক্ষনে তো অস্ট্রেলিয়া দলে যা ক্ষতি করার অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ তা করে দিয়ে গেছেন। 

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মন্থর গতিতে শুরু করে অজিরা। অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ওপেনিংয়ে নেমে নাসুম আহমেদের শিকারে পরিণত হন দলীয় ৮ রানে। রানের ধীরগতি যেন অস্ট্রেলিয়া দলকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় মাত্র ২০ রানে। যা তাদের পাওয়ারপ্লেতে তোলা সর্বনিম্ন রান।  এরপর ঠান্ডা মাথায় খুব দ্রুত  ৬৩ রানের জুটি গড়ে ফেলেন একাদশে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া ব্যান ম্যাকডারমট ও মিচেল মার্শ।

৭১ রানে তাদের জুটি ভাঙতে আবির্ভূত হন বাংলাদেশের তুরুপের তাস সাকিব আল হাসান, ৪১ বলে ৩৫ রান করে বিদায় নেন ম্যাকডারমট। এতে চাপে পড়ে যায় দলটি। যা আরও বেড়ে যায় শরিফুল ইসলাম মইসেস হেনরিকসকে শিকার করলে। ফর্মে থাকা মার্শ ৯৪ রানে শরিফুলের শিকারে পরিণত হন। তার আগে ৪৭ বলে ৫১ রান করে আতঙ্ক ছড়ান বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটে।

শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৫৫ রান যা পরবর্তিতে ২ ওভারে ২৩ রানের একটা ন্যালবাইটিং ফিনিশের মধ্য দিয়েই আগাচ্ছিলো। কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমানের করা ১৯তম ওভারে অজিরা মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হয়। শেখ মেহেদী হাসানের করা শেষ ওভারে ১১ রানের দেখা পায় ওয়েডের দল। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে সফরকারীদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৭ রান। অ্যালেক্স ক্যারি ১৫ বলে ২০ ও ড্যান ক্রিশ্চিয়ান ১০ বলে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন, তবে তারা কেউই দলকে জয় এনে দিতে পারেননি।

৪ ওভার বল করে দ্যা কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ মাত্র ৯ রান খরচ করেন যদিও তিনি কোনো উইকেট পাননি। তবে তারই ধারাবাহিকতায় ২৯ রানের খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন শরিফুল। এছাড়াও নাসুম ও সাকিব নেন একটি করে উইকেট। যা দলের জয়ে বড় ভূমিকা পালন করে।



সংক্ষিপ্ত স্কোর:

টস : বাংলাদেশ

বাংলাদেশ : ১২৭/৯ (২০ ওভার)

রিয়াদ ৫২, সাকিব ২৬, আফিফ ১৯

এলিস ৩৪/৩, হ্যাজলউড ১৬/২, জাম্পা ২৪/২

অস্ট্রেলিয়া : ১১৭/৪ (২০ ওভার)

মার্শ ৫১, ম্যাকডারমট ৩৫, ক্যারি ২০*

শরিফুল ২৯/২, নাসুম ১৯/১, মুস্তাফিজ ৯/০, সাকিব ২২/১

ফলাফল : বাংলাদেশ ১০ রানে জয়ী।


নোট: সব সময়ের সেরা আপডেট নিউজ গুলো দেখতে ওয়েবসাইটের নিচে "ট্যাগ"
 অপশনের মধ্য থেকে আপনার পছন্দের ট্যাগটিতে ক্লিক করুন।
 
আমাদের ফেসবুক গ্রুপ লিংক:
আমাদের ফেসবুক পেজ লিংক:
ঢাকার মধ্যে টু-লেট সংক্রান্ত সকল তথ্য পেতে জয়েন করুন: