অকৃত্রিম হালাল ভালোবাসা

 আত্মীয় মারা গেছেন,স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে যাবেন আত্নীয়ের বাড়িতে। স্ত্রী খাস পর্দা করেন, হাতে হাত মোজা, পায়ে পা মোজা, বোরকা থেকে শুরু করে ইসলামিক উপায়ে জীবন পরিচালনা করতে পছন্দ করেন। পরে কিছুদূর আসার পর বাঁধল যত বিপত্তি।

হায় আল্লাহ,রাস্তা যে ডুবে গেছে পানিতে! কি হবে এখন?

কি আর হবে? পা মোজা খুলে হাতে নিয়ে পানিটুকু পার হতে হবে! কিন্তু না, প্রাণপ্রিয় স্বামী প্রাণপ্রিয় স্ত্রীকে বললেন,"খুলতে হবে না তোমার পা মোজা, আমি তোমার যাওয়ার ব্যবস্থা করছি, আসো আমার সাথে।" স্ত্রী অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো তার স্বামীর দিকে! কিভাবে পার করবে তার স্বামী তা সে জানেনা। কিন্ত তার প্রতি স্বামির যে ভালোবাসা তা যেন সে এখন পুরোপুরি আঁচ করতে পারছ। তৎক্ষনাত স্বামী প্রিয়তম স্ত্রীর জন্য ইটের সারি বিছালো যাতে করে স্ত্রী নির্ভয়ে নিবৃতে বিনা বাঁধায় পার হতে পারে। এ যেন ভালোবাসা ও ভরসার জীবন্ত চূড়া।

তারপর প্রতিটি ইটের ধাপ আগায় আর স্বার্থপর পৃথিবীর বুকে কোনো এক নিভৃত গ্রামে ছাপ ফেলে যায় স্ত্রীর প্রতি মোহময়ী ভালোবাসার অপূর্ব নিদর্শন! যে নিদর্শন দাগ কেটে যায় তৃষ্ণার্ত হৃদয়গুলোর ছন্নছায়ায়, যে দৃশ্যের শীতলতা স্পর্শ করে মনের কিনারায়, যে জীবন কেবলই নয়ন জুড়ায়! তখন শুধু মনে একটা বিষয়ই দাগ কেটে যায় বেচেঁ থাকুক এমন অপূর্ব ভালোবাসা। সমৃদ্ধ হোক ভালোবাসা ময়ী পৃথিবী।

মাশ-আল্লহ!

এমন অকৃত্রিম হালাল ভালোবাসা গুলো যেন স্বর্গ থেকে আগত, পবিত্র এক বন্ধনের হৃদয় ছোঁয়া অনুভূতির প্রশান্তির রুপমালা! চোখ যে ফেরানো দায়, হৃদয় যে জুড়িয়ে যায়। শুধু মায়ার বাঁধনে বাঁধতে চায়। মনের আঙিনায় নতুন করে বেঁচে থাকার সপ্ন যোগায়।

কী দিয়ে পরিশোধ হতে পারে এমন ভালোবাসার ঋণ?

পারবে কি কেউ এ প্রশ্নের উত্তর দিতে? অথচ সে উত্তর তো আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) দিয়ে গিয়েছেন আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে,"তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যে তাঁর স্ত্রীর কাছে উত্তম।"

হায় মাশ-আল্লহ! পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মানুষটার কাছ থেকে কী দামি এক সার্টিফিকেট। এর থেকে দামী জিনিস আর কি হতে পারে?

আমাদের প্রান প্রিয় নবী আমাদেরকে এতটা ভালোবাসতেন বিধায় তিনি আমাদের জন্য মহান রব্বীল আলামিনের নিকট সবসময় একটায় দুয়া করতেন।   

"হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এমন স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন, যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন।" (সূরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৪)

শত সহস্র কোটি বছর বেঁচে থাকুক এমন কলিজা জুড়ানো ভালোবাসার গল্প গুলো। এ গল্পের শেষ পরিণতি হোক আমার রবের জান্নাত। আমরা সবাই যেন সঠিক পথে থেকে সুখী সমৃদ্ধ জীবন গড়তে পারি সেই শুভকামনা জানিয়ে শেষ করছি আজকের অকৃত্রিম হালাল ভালোবাসার গল্প।