এতটা সমন্বয়হীনতা নিয়ে দেশ চলতে পারে না

 "এতটা সমন্বয়হীনতা নিয়ে দেশ চলতে পারে না। গণপরিবহন ব্যবস্থা না করে কিভাবে কলকারখানা খোলার অনুমতি দেন নীতি নির্ধারকরা? যেখানে বেশিরভাগ গার্মেন্টস্ শ্রমিকদের বেতন ৬,০০০-১০,০০০ টাকা। সেখানে গনপরিবহন খোলা না থাকায় তাদের দ্বিগুন থেকে তিনগুন টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার জন্য। আহ বাংলাদেশ আহ। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।"  বলছিলাম একটি সাধারন গার্মেটস শ্রমিকের কথা। 

যাদের দ্বারা বাংলাদেশ আজ শিল্প অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ হয়ে রপ্তানী খাতে দ্বীতিয় স্থান অর্জন করার সম্মান পেয়েছে তাদের সাথে এমন নিকৃষ্ট আচরণ একটা দেশের সরকার কীভাবে করতে পারে। 

ওদিকে ঢাকা মুখি মানুষের যে ঢল নেমেছে তাতে পুরোপুরি গার্মেন্টস মালিকপক্ষের কোনো দায় নেই বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের কাছে আকুতি জানাতে ছুটি যাওয়া তারাই আজ দ্বায় এরানোর সুযোগ খুচ্ছে। তাদের বক্তব্যও স্পষ্ট, “রাজধানীর বাইরে থেকে কাউকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয়নি। ৫ তারিখের আগে আসতে না পারলে কোনো ধরনের বেতন কাটা হবেনা।” অন্যদিকে, গনপ্রশাসন মন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন, “যারা ঢাকার আশেপাশে আছে তাদের নিয়েই চলবে রপ্তানি মূখী শিল্পকারখানা।” তাহলে যারা গ্রামে যারা আছে তাদের কি দোষ ছিলো। তাদের ঘরে খাবার আছে কি নেই, সেই ব্যাপারে দ্বায় কতটুকুইবা এড়াতে পারে সরকার। 

হেডলাইনটা এভাবে হলে হয়তো ভালো হতো হঠাৎ করে রপ্তানিমুখী সকল শিল্পকারখানা খোলার সরকারি সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে আমাদের দেশের দাস-দাসিরা। ওহ! আমাদের দেশের গার্মেন্টস কর্মীরা। যাদের গায়ে পাড়া ‍দিয়ে এক শ্রেনীর ভেম্পায়ারেরা তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে ব্যস্ত। তাইতো ফেরিঘাট থেকে শুরু করে দেশের প্রবেশমুখ- যাত্রা পথে এমন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে সবখানে শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড়। 

"পরিবহনের ব্যবস্থা করবেন না অথচ গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের একটি অপরিকল্পিত ভাবনার একটি ফলশ্রুতি বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন" গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি মন্টু ঘোষ।

সরকারের এই পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চাইলে গার্মেন্টসকর্মী মোহম্মদ সুমন বলেন,"কভার বেলায় সবাই কয় চাকরি যাবেনা, অথচ যার চাকরি যায় তার সংসার চালানোর দ্বায়ভার কে নেবে। আমরা সাধারন মানুষ তখন কার কাছে বলবো যে আমার চাকরি গেছে সেটার জন্য সুষ্ঠ ব্যবস্থা করেন? আপনি নিবেন? যদি প্রশাসন নেয় তাহলে প্রশাসনকে অভিযোগ করার তালিকা দিতে বলেন। চাকরি গেলে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করে দিন। তারপর বলেন যে চাকরি যাবে না। আমার পেটে ক্ষুধা লাগবে সেটার ব্যথা আমি ভোগ করি কিন্তু অন্য জনে ভোগ করে না। অন্যজনের শুধু তাকিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে পারে। এতোটুকুই এর চেয়ে বেশি না।"

কে বলেছে দাস প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে!দেখুনতো এদের দেখলে কি দাস প্রথার কথা মনে পড়ে কিনা? যখন মন চাইবে তাদের বাড়ি পাঠাবে আবার যখন মন চাইবে তাদের দাসদের মত টেনে আনবে৷ থুথু মারি এসব ব্যর্থ নীতি নির্ধারকদের মুখে ।